smoke-image1 smoke-image2 smoke-image3

About Us

History Of Temple (বাংলা)

  • Home
  • Temple History (বাংলা)

ভূমিকা

যশোর রোডের ধারে অবস্থিত এই মন্দিরটিতে ১৯৫০ সাল থেকে মন্দিরের পবিত্র গর্ভগৃহে মা পুজিত হয়ে আসছেন, যাকে সবাই গৌরীপুর কালীমন্দির নামে জানে। এটি উত্তর দমদম মিউনিসিপ্যালিটি, কলকাতা-৭০০ ০৫১, এয়ারপোর্ট থানা, উত্তর ২৪ পরগনায় অবস্থিত। এটি একটি দক্ষিণা কালীমন্দির এবং 'গৌরীপুর কালীমা হিসাবে বিখ্যাত ও পরিচিত। বিশেষ করে মঙ্গল ও শনিবার এই মন্দির লোকারণ্য থাকে। আর বিশেষ বিশেষ উৎসবের দিনে জনস্রোত লক্ষ করা যায়। যেমন বাংলা নববর্ষ, ইংরেজি নববর্ষ, বিশ্বকর্মা পূজা এবং প্রতি অমাবস্যার পূজায়। মন্দিরের পুরোহিতের দ্বারা নতুন গাড়ি ও অন্যান্য নতুন যানের পুজা প্রতিদিন সকাল ও বিকালে অনুষ্ঠিত হয়।

ইতিহাস

এই মন্দিরে অনেক অদ্ভুত অলৌকিক ঘটনা ঘটে গেছে, যা মানুষের মনে এক বিশ্বাস ও আস্থার জন্ম দিয়েছে এই মন্দিরকে ঘিরে। স্বর্গীয় গিরিশপতি চট্টোপাধ্যায় মহাশয় যিনি নিজে ব্যক্তিগত জীবনে খুব ধার্মিক, সৎ ও শান্ত স্বভাবের ছিলেন, কিছু স্থানীয় মানুষের সহায়তায় ও নিরবচ্ছিন্ন প্রয়াসে বাঁশের চালাঘরে মন্দিরটি স্থাপন করেন ও নিত্য পূজা শুরু করেন। পরবর্তীতে স্বর্গীয় কালীদাস মল্লিক, জনপরিচিতি ছিল লালবাবা নামে এবং এক দৈবিক শক্তির অধিকারী ছিলেন বলে ভক্তদের বিশ্বাস ছিল। তাঁর সুললিত, উদাত্ত কালীমন্ত্র তাদের বিভোর করে রাখত। এর পরে যে মাটির মূর্তি ওই মন্দিরে অধিষ্ঠিত ছিল তার বদলে এক নিকষ কালো কষ্টিপাথরের মূর্তি সভাগৃহে প্রতিস্থাপন করা হয়। হিন্দু ধর্মের সমস্ত রীতিনীতি মেনে প্রবল নিষ্ঠার সঙ্গে দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে ওই স্থানে দুটি পবিত্র চূড়া আছে-একটি সভাগৃহের উপরে, অপরটি পাশেই অবস্থিত নবনির্মিত নাট মন্দিরে। গর্ভগৃহের ভিতরে একটি বিশুদ্ধ রূপার সুসজ্জিত সিংহাসনের উপর মা অধিষ্ঠিত আছেন।

about
about about

ভক্তগণ

বিশ্বাসী ও ভক্তকুল এই জাগ্রত কালীমাতার অলৌকিক দৈবিক শক্তিতে দৃঢ় বিশ্বাস রাখেন। এই মন্দিরে বিশ্বাসী ভক্তরা জাতি-ধর্ম, উচ্চ-নীচ, ধনী-দরিদ্র, নামি-অনামি নির্বিশেষে নিয়মিত শ্রদ্ধার সঙ্গে পুজা দিয়ে যান (আগে মায়ের ভোগের নিমিত্ত নিয়মিত পাঁঠাবলি দেওয়া হত, পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে 'মা'-কে বিশুদ্ধ নিরামিষ ভোগ উৎসর্গ করা হয়।



বার্ষিক কালীপুজো

বার্ষিক কালীপূজার দিনে মধ্যরাত্রে পরম্পরাগতভাবে রাজবেশে মাকে বিশুদ্ধ স্বর্ণালংকারে সাজানো হয়। মায়ের এক অপরূপ চিত্তাকর্ষক রূপ। দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা এই পবিত্র মন্দিরে মধ্যরাত্রে এসে পূজায় অংশগ্রহণ করেন, অঞ্জলি প্রদান করেন ও মায়ের আশীর্বাদধন্য হন। নিশি উদযাপন পর্যায় অমাবস্যায় বৈকালিক আরতির পর পূজা সম্পাদন করা হয়।

নিয়মিত পূজা ও অন্নভোগ

এই মন্দির প্রত্যেক দিন উষালগ্নে মঙ্গল আরতির সাথে উন্মুক্ত হয় এবং মূর্তিকে নতুন বেশে সজ্জিত করা হয় ।ভক্তদের পূজা ও অঞ্জলি চলে দ্বিপ্রহর পর্যন্ত। প্রত্যহ 'মা'কে দ্বিপ্রহরে অন্নভোগ দেওয়া হয় ও পরে সেই প্রসাদ ভক্ত ও সাধারণের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

নিত্যপূজা ও অঞ্জলি ব্যতিরেক ভক্তরা বিশেষ পূজার ব্যবস্থাও পেতে পারেন। তাতে তাঁরা তাদের সাধ্যমতো ভোগের নৈবেদ্য, শাড়ি, স্বর্ণ বা রৌপ্যালংকারও দিতে পারেন। ভক্তরা নিজেদের পারিবারিক অনুষ্ঠান যেমন অন্নপ্রাশন, জন্মদিন ইত্যাদিতে বিশেষ পূজার ব্যবস্থা করতে পারেন। এজন্য মন্দিরকে আগে জানাতে হবে এবং নির্দিষ্ট দিন সংরক্ষণ করতে হবে। ভক্তদের এইসব বিশেষ পূজার ক্ষেত্রে মালসা অন্নভোগ পূজার পরে দেওয়া হয়।প্রতি অমাবস্যায় সন্ধ্যায় পুজায় পরে ভক্ত ও সাধারণ মানুষকে খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানো হয়।

এই মন্দিরের পাশেই গড়ে উঠেছে এক শিবমন্দির, ভক্তেরা ওই শিবলিঙ্গের ওপর জল ঢালে শিবরাত্রিতে এক বিশেষ পূজা হয় এই মন্দিরে রাতের বেলা, যা চার প্রহরের পূজা নামে পরিচিত। বিপ্রহরে মন্দিরে অন্নপ্রসাদের সুবন্দোবস্ত আছে। দুপুরে রোজই মূল মন্দিরের গর্ভগৃহ বন্ধ থাকে।

গর্ভগৃহ

দুপুরে বিশ্রামের গর্ভগৃহের দরজা প্রতিদিন বিকালের পর আবার খোলা হয়, মাকে নতুন শাড়ি পরিয়ে দর্শন ও পূজা করা হয়। বৈকালিক আরতি এই মন্দিরের বিশেষ আকর্ষণ। ঢাক, কাঁসর, ধূপ-দীপ ও পঞ্চপ্রদীপ সহযোগে আরতি এক স্বর্গীয় অনুভূতি নামিয়ে আনে এই মন্দিরপ্রাঙ্গণে। শঙ্খধ্বনি দিয়ে এই সন্ধ্যারতি সমাপন হয়। এর পরে হয় বৈকালিক প্রসাদ বিতরণ। অমাবস্যা ব্যতীত রোজই রাত ৯টায় গর্ভগৃহ বন্ধ হয়ে যায়।



কালীমন্দির ট্রাষ্ট

G১৯৫০ সাল থেকে এই মন্দির গৌরীপুর সার্বজনীন কালীমন্দির ট্রাষ্ট দ্বারা পরিচালিত হয়।এই ট্রাস্ট অনেক সমাজকল্যাণমূলক কাজ করে। বিশেষত, সমাজের পীড়িত অংশের কল্যাণমূলক কাজগুলি যেমন-দুই মহিলাদের শাড়ি দান, দুই পরিবারের কন্যার বিবাহে বেনারসী দান, দুস্থদের চিকিৎসায় সাহায্য এবং ওষুধ দান, দুই বালক-বালিকার শিক্ষায় সাহায্য, পুস্তক বিতরণ এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিভিন্ন রকমের সাহায্য ইত্যাদি।
আমাদের ট্রাষ্ট ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্স-এর ব্যবস্থা করে রোগীদের জন্য। মাতৃআশীষ ভবন সেবাকেন্দ্র হচ্ছে আমাদের ট্রাস্টের পরিচালনায় একটি সহ-প্রতিষ্ঠান। ডাক্তারদের মেডিক্যাল। ইউনিট, কম্পিউটার শিক্ষা (ছাত্রদের জন্য) লাইব্রেরি, কবিরাজি চিকিৎসা, মনোরোগ চিকিৎসা নি ইত্যাদিও আমাদের ট্রাক্টের পরিধির মধ্যে পড়ে।